Posts

ধ্বনি ব্যবধান

সকাল প্রায় ১১ তা বেজে গেছে । শেষ রাতে দেরিতে গুমিয়েছিলাম তাই ঘুমটা ভাঙলো অনেক দেরিতে । তাও ঘুমটা ভাঙেছে মূলত একটা স্যাক্সোফোনের ধ্বনিতে। পাশের ফ্লাটের কেও একজন বাজাচ্ছে, আমাদের ফ্লাট গুলো এক সারিতে হওয়ায় তাকে দেখতে পাইনি। গভীর, নিখুঁত্‌ আর অনেক নীরবতার মিশ্রণে সুরটা ডেওয়ের মত ভেসে বেড়াচ্ছে । তার সৃষ্ট সুরের অর্থটা এমন হতে পারে , পৃথিবীর মাঠ থেকে আর কত দিন আলাদা থাকবে চার দেওয়াল। আজ অনেক দিন হলো, বাসায় বসে আছি। জানালা দিয়ে মানুষ শূন্য মেট্রো আর বাস লাইনটা দেখা যায় । মাঝে মাঝে একটা, দুটো ছোট ছোট গাড়ি যাচ্ছে । এই অবিশ্বাস্য ব্যবধানে , একটা গান মনে পরে যায়, চাইলে তুমি হারিয়ে যাও রাজাহীন কোন রাজ্যে জনশূন্য কোন প্রাচ্যে। মানুষ নেই এখানে অথবা পৃথিবীর রাস্তা ফাঁকা, শুধু সি সিগার্ল আর কবুতর ছাড়া একটা পাখিও নেই , । অবশ্য ইউরোপে এতো পাখির দেখা মেলে না ,আজকাল কবুতর গুলোকেও দেখতে পায় না। রিজভী নাভিন

সহর্ষ

জীবনের কল্পনায় ফিরে আসে অতিত। উদিয় সূর্যের কিরণ বিস্তৃত হয় চারণভূমিতে। আবছা কুয়াশা চিরে আসে হালকা রুপোলী রুদ। সারিবদ্ধ হিম স্নাত ভেজা সবুজ ঘাসেরা  দারিয়ে রয় বহুক্ষণ। ঘুমন্ত সর্ষে খেতের মাঝে বয়ে চলে হেমন্ত। তারি বুকের জমে থাকা শিশিরে দৃষ্ট হয় চারপাশ । কন কন হাওয়ারা উত্তরমুখী । চাদরে মুরানো শরীর, হাত গুলো ছেড়া কাগজে ঝালানো আগুনের উপর।️ নিশ্চল খেজুর, তাল গাছের বুকে খচিত নকশায় ঝুলানো হারি, টুপ টুপ মিষ্টি রসে চতুর বুলবুলি,শালিকের মুখ হয় রঙিন । কিষাণি বাড়ির ভাপা পিঠের গ্রান ভেসে  চলে যায় শিম গাছের মাচার দিকে।️ চলতে থাকে সবকিছু সামাজিকতার নিয়মে । অভ্ররা নিলাকাশে স্থির হয়, তরান্নিত সূর্য মাঝ আকাশে উঠে ।️ স্কুলের ঘণ্টা জানিয়ে দেয় বাড়ি ফেরার ডাক। সাইকেলের খট খট শব্দে মাস্টার মশায়ের বিদায়। বই হাতে ছুটাছুটি ছেলে মেয়ের দল। অখণ্ড সন্ধের ধোঁয়ারা, সুপরি বাগানের মাথায় ভাসমান কিছুটা সময়। খীণ হয় সৃষ্টিগুলো ও তার চারপাশ নিরবশেষ। আবার সূর্য হেলে পরে। শহর,গ্রাম সহর্ষ অপেক্ষায় আবার আগামী ভুরের অপেক্ষায়। যার আবহিত মিষ্টি উজ্জ্বলতায় আবার তারা হবে অশেষ। ⬇️ --রিজভী নাভিন

আহত (কবিতা)

ঘনিয়ে আসে সময় উপলব্ধিরা স্থির রয় জিবনের মাঝে। -ঠিক যেমন ঝিঙে ফুল রোদে হাসে, তেমনি তাদের হাসিতে প্রফুল্ল হয় ঝলক। আমি বলতে পারি কোন অহংকারি হাসি তারা হাসে না । নিষ্প্রাপ ইচ্ছা। মাঝে সব শরৎ, ঋতুরা লুকিয়ে থাকে একসাথে। -জীবন নামের যে রুপ, তা একসাথে কাটে মাঝ বয়স কাল অবধি। একটা সময় কেন জানি মেলে না। চাওয়ারা ফাঁকি দিয়ে যায়। মাত্র, তার ইচ্ছেটা রয়ে যায় বছরের পর, যুগ ধরে। পৃথিবীর বুকে নেমে আসে হাজারো বাদলা, আসে রুপ অপরুপের বিন্যাস। আমরা বিলিন হই না পাওয়ার হিসেব রেখেই। পরের প্রজন্মরা প্রস্থুত একি জয়গানে, পাওয়ার ব্যাকুলিত যুদ্ধ নিয়ে আবার। শুধু ময়দানে পরে থাকে তার অভাগা আক্ষেপ। --রিজভী নাভিন

(কবিতা)

ছুটছি ! প্রভাতের নৌকোই কিছু ঊষা নিয়ে। ধরে ঘুমের হাল ! শিশির ঝরে এলো, চলি তড়বড় ! ভরসায় যেন, না আসে কাল ! --রিজভী নাভিন

প্রকৃতি ভ্রমণ 🌅

বাস এর জানলা দিয়ে দেখছি "আকাশে জমাট ও স্থির হয়ে আছে অল্পখনের রুপোলি আবির । এখন ফরিদপুর জেলার উপর আছি। আজ বেশ কয়েকটি জেলাশহর দেখা হয়ে গেল। সত্যি বলতে কখনো এদিকটাই আসা হয়নি। সবগুলো শহর দেখতে একি রকম আর প্রচুর গাছ গাছালীতে আবরিত। দোকান গুলোর মাথায় টাঙানো বোর্ড এ নাম গুলো দেখে বুঝি এটা এই শহর বা এই জেলা। কিন্তু এই ফরিদপুর জেলার ভেতর এসে কেন জানি বার বার পল্লি কবি জসিম উদ্দিনের কথা মনে পরে গেল আর তাম্বুলখানা গ্রামটি কোথায় হতে পারে তা মনে মনে ভাবছি। কিছুক্ষণ পর পর ছোট ছোট নদীর দ েখা মেলে। আর নদীগুলো দেখলে মনে প্রশ্ন হয় এই নদী, ও নদীই কি ছিল তার বর্ণনায়। ঘড় বাড়ি গুলো দেখে মনে হয় ডালিম গাছটা কি এই বাড়িতেই ছিল, আবার গলা বাড়িয়ে কবরটাও অন্বেষণ করতে চেষ্টা করছি ? সাদা শাপলা গুলো সারাদিনের ক্লান্তি শেষে ঘুমিয়ে পরেছে, ছয় দিন আগে দেখেছিলাম রাজবাড়িতে। এতো সাদা শাপলা এক সাথে সত্যিই অনেকদিন পর দেখলাম। পাটের একটা উষ্ণ গন্ধ বাতাসে বাতাসে ভাসছে, হইতো পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়েছে কোথাও। আর পাট গাছের শলা গুলো গুল গুল করে বেধে সাজিয়ে রাখা হয়েছে প্রতিটা বাড়ির সামনের উঠনে। তাম্বুলখানা গ্রামটি হইতো আরো অসাধার...

অপরাহ্নের শ্রী

এমন ভাদ্রে ক্ষণে ক্ষণে আকাশটা কালো হয়, নামে বৃষ্টি, স্পষ্ট হয় বিকেল, আর রেল লাইনটা করে চিকচিক । লম্বা লাইনটা ধরে বিকেল বেলার হাঁটার যে নেহাত বর্ণনা, তা না দিলেও শ্রোতাদের বুঝতে কোন অসুবিধা তো হবেই না বরং আশা রাখি বাস্তব দৃশ্যরূপও চোখের সামনে বোধগম্য হবে! তবে হাতের গুচ্ছ ফুলেরতোড়ার নামতাও যে বলা প্রয়োজন আছে তাও এই মুহুর্তে বলার ইচ্ছে পোষন করছি না। সময়টা মাথায় রেখে এগুলাম মিনা, আয়ানদের বাড়ির দিকে। এক সময় উপস্থিত হলাম, কিন্তু কই অজয়া এতো দেরি করছে কেন? আজ কি তবে পড়াতে আসেনি? হাত ঘড়িটায় চেয়ে দেখি প্রায় ছটা বাজে, সন্ধ্যার উপক্রম আবার বৃষ্টি নামবে নামবে অবস্থা ! হঠাৎ দৃষ্টি প্রসারিত হল দূরে চলে যাওয়া রেল লাইনটার দিকে, মুহূর্তে অন্বেষণ করলাম সাদা শাড়ি ও সাদা ছাতা মাথায় করে দ্রুত হেটে আসছে আমার আশাব্যঞ্জন সত্য মূর্তি!  কাছাকাছি হওয়ার পর:"তুমি এখানে?" আমি:"না এলে কোথায় পেতাম হে?" "শুভ জন্মদিন!! " বলে ফুলেরতোড়াটা সামনে এগিয়ে দিলাম। আর, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গানের মতই, "এক গোছা রজনীগন্ধা, হাতে দিয়ে বললাম। চললাম! চললাম!" --রিজভী নাভি...