Posts

Showing posts from July, 2017

দীঘির ছায়া 👤 --(অণুগল্প)

🕓 বাতাসে এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে চুল, শাড়ীর আঁচল উড়ে যাচ্ছিলো পেছনের দিকটায় । নিরবিগ্নে বয়ে আসা হাওয়ায় নিজেকে সামলাতে পারছে না সে কিছুতেই! বড় দীঘিটার ঘাটে বসে লক্ষ করছি এসব। অনেক গুলো নীল চুড়ি পড়া হাতে, ঢেকে যাওয়া মুখ থেকে চুলগুলো সরাচ্ছে ও বার বার। প্রবল বাতাসে উড়তে থাকা আঁচল টেনে মর্মস্থল আবরিত করে পাশের কোমরে গেঁথে দিচ্ছে তা আবার। বাতাসের সাথে যুদ্ধ করে করে তীব্রতা ভেদ করে হেটে আসছে আমার দিকে। চতুষ্কোণী দীঘিটার একপাশে লম্বা সারি সারি সুপারি গাছ ও তাদের ছায়া পড়েছে পুকুরের স্থির কালো পানিতে। যেন ফ্রেমে বাঁধানো একটা ছবি ঠিক উল্টিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে কোন এক ঘরের দেয়ালে। কিছু হাঁসের ছানা এক কোণায় কমলি ঘাসের ফাঁকে ঠুকিয়ে ঠুকিয়ে কি যেন খাচ্ছে। তাদের মাকে খুঁজে পেলাম না,হইতো আছে কোথাও। এসব দেখতে দেখতে হঠাৎ জয়া এসে আমার পাশে বসলো ।  👫 ও কে আমিই আসতে বলেছিলাম । কিছুদিন পর বাড়ি চলে যাবে, একটা নাকফুল কিনে দেবো বলে। টাউনের দোকানগুলো ঘোরে শেষে একটা নাকফুল ও একটা ব্যাগ কিনে দিলাম । দু জনে টক জল খেলাম আরো কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর শেষ বিকেলে একটা রিকশায় তুলে দিয়ে ফিরছি এমন সময় পেছন থেকে ব...

ছবি !

রোদ আছে আবার নেই , বিকেল গড়াচ্ছে অসম ঘিরে, ভাবনা গুলো দল বেঁধে বেঁধে. ক্ষীণ চারপাশ, পশ্চিম আকাশ রক্তিম আভা ছড়িয়ে, নিয়ে উধাও হবে। রয়ে যাবে ফ্রেমে বাধা এক অংশ। এটাকে বলবো "জীবন সারাংশ "! --রিজভী নাভিন

চল ! আজ আবার ।(অণুগল্প)

সে ই কবে থেকে নিজেকে সংযত রাখছি আর পারি না, পারছি না। এই প্রতিরুদ্ধ জীবনের শেষ কোথায় তাও জানিনা। স্বর স্বর হাওয়ায় সাদা মেঘেরা ছুটেছিল নির্বিঘ্নে, ভুলে গেছো? উচ্ছ্বসিত ছিল দুটো প্রাণ ও আমাদের মনের।  চল!-আজ আবার না হয় একবার হাওয়ায় মত হই! তোমার বিরক্তি আর অভিমান গুলো ছিল আমার কাছে তুচ্ছ। কথা দিচ্ছি আজ বুঝব ও সব নিজের করে নেব। চল!-আজ আবার অভিমান করবে। ভুলে গেছো সেই গাছটার কথা, মরিয়া হয়ে আগলে রাখতো তোমায়-আমায় । নির্বাক দারিয়ে থেকে সমস্ত রোঁদ ঢেকে রাখতো। চল!-আজ আবার সেই ছায়ায় আবদ্ধ হই। বলেছিলে, ঝতক্ষন না তোমার রাগ ভাঙবে পিঠে পিঠ রেখে দুদিকে মুখ করে বসে থাকবে। তুমার শর্তেই রাজী ছিলাম । চল!-আজ আবার পিঠে পিঠ রাখি। আর যদি হাসতে, সাথে সাথে দুর্বা ঘাসে শুয়ে পরে মাথাটা তোমার কুলে রাখতাম, আর তোমার প্রিয় গানটা একসাথে গেয়েছিলাম ভুলে গেছ তুমি। চল!-আজ আবার গানটা গায়। বেলার শেষে যখন উঠে যাওয়ার গুঞ্জন করেছিলে, আরেকটু থাকবে বলে আবার অনুরোধ করেছিলাম। আর গল্পের ফাঁকে হঠাৎ দিগন্তে আঙুল তাক করে দেখিয়ে ছিলাম সাত বর্ণ, দৃশ্যতই জানিনি কিভাবে এসেছিল রংধনুটা তখন, বলেছিলাম, সময়-ওই সাত বর্ণের ক...

১- (উপন্যাস)

রাত আসে, রাত চলে যায় । কিন্ত হাজার বছর আগের একটি রাত যে এখনো থেকে যায় তা কেও জানতো না। আজ থেকে প্রায় ৯০০ বছর আগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা পাল সাম্রজ্যের প্রখ্যাত পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের মৃত্যুর ঠিক পরের ঘটনা । নির্দয় রাজা অলিন্দলাং এর শাসন আমল তখন । হাজার বছর আগের রাজ্য প্রজ্বলিত হয় শুধু পূর্ণ জোছনাময় নিঝুম রাতে । প্রতিটা আত্মা এখনো চিৎকার করে বন্দী জীবন থেকে পরিত্রাণের আশায় ! এত বছর পরেও তারা জীবিত থেকে যায়, আর এই সব লিলা খেলার আয়োজনে রাত নেমে আসে অন্তহীন হয়ে। এক সময় যেখানে  সবুজে আচ্ছাদিত ছিল নগরী আজ রাজ্যটির চারপাশ জনমানবহীন কোন ঘড় বাড়ী নেই শুধুই খাঁ খাঁ মরুভুমি, শুধু মাত্র প্রাসাদটি ঘিরে আছে নাম জানা বা নাজানা লতায় পাতায় এবং প্রাসাদের প্রতিটা দেওয়াল ডেকে দিয়েছে সেগুলো ,খসে পরেছে দালানের আস্তর ও প্রতিটা গাঁথুনি । এমন জীর্ণ প্রাসাদে দিনের বেলাতেও কেও যায় না। শুধু আগন্তুকরা মাঝে মাঝে প্রাসাদের বাইরে ছোট একটা ছায়ায় বিশ্রাম নিয়ে মুহূর্তেই চলে যায়। শ্বা শ্বা শব্দে সকল আত্মারা শুধু চিৎকার করে, আত্মা বলবো না সাহেব ,সবাই জীবিত মানুষ সাহেব। যারা এখনো বেঁচে আছে মুক্তির অপেক্ষায় কি...

শালীন আকাশ (কবিতা)

জুলাই এর ঝাপসা কালো,শালীন আকাশ। মাঝে গুচ্ছ শুভ্র মেঘ বয়ে যাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। ভ্রান্তি ও সমাহার কালো-সাদা রঙের ! তাদেরি আয়োজনে মিশিয়ে যাচ্ছি বিদ্যমান একান্তে এখন। যেন তাদেরি প্রয়োজনে পথ ধরে হেটে চলেছি কাল থেকে একাল অথবা বহুকাল ধরে। --রিজভী নাভিন

বেগুনী বৃষ্টি ! ☔ (অণু গল্প)

লে পটানো দূর্বা ঘাসের উপর তিনটি পা দারিয়ে আছে ক্যানভাসটাকে আঁকড়ে ধরে।  🎨 সাদা পেপারটার ঠিক অর্ধেকটাই বিকেলের মৃদু অনুজ্জ্বল, ঘোলাটে রোদটা এসে পরেছে। ঠিক এই মুহূর্তে তুলিতে কোন রঙটা লাগাবো চিন্তার সাথে তা মিলিয়ে নিতে পারছি না যেন,অনেক ছবি একেঁছি এমনটা হয়নি কখনো, আর কেনই বা এমনটা হচ্ছে তাও বুঝতে পারছি না। সামনে কিছু ফিঙে এদিক-ওদিক উড়াউড়ি করছে দেখে  🐦  তুলিটা রঙের কটোরায় কালো বৃত্তে রাখলাম কিন্তুু নাহ মনটা তবুও ভরছে না। আজ তাহলে ছবি আঁকা আর হবেনা ভেবে রেগস দিয়ে তুলির মাথা থেকে রঙটা মুছে নিলাম। সবুজে আবরিত জায়গাটা বেশ নিরিবিলি।  🌅 তাছাড়া ডান দিকটায় কিছু গাছের সমন্নয়ে পথটা চলে গেছে পুরানো ভাঙা জমিদার বাড়ির দিকে অসার শূন্য বাড়িটা আমার থেকে অল্প দূরে সুস্পষ্ট প্রতিয়মান। আর বা দিকটায় বয়ে গেছে একটা প্রবাহিণী যার বয়ে চলা স্থির প্রবাহ মুক্ত জীবনকে আরো দীর্ঘ আরো প্রগাঢ় করে দেয়। সামনের দৃশ্যটায়, একটা তাল গাছ ও অনেক গুলো সুপরির সারিতে এক খানা গ্রাম আবরিত মেঘেরঘটায়। সব মিলিয়ে চারদিক শুধু ছবির আড়ম্বর ও আদরা। তবুও কেন যেন আসছেনা ভেতরের ছবিটা ।  📆 বিকেল দূসর হচ...

নব্যের আহবানে (কবিতা)

উ দ্দেশ্য অতিক্রান্তকে নিয়ে নয়, আসন্ন নব্য কে নিয়ে, সমস্ত ক্রিয়াকলাপ জুড়ে ছিল যত বিবাদ, ভালবাসা, গ্লানি অপহাস ও তোমাদের ভালোবাসা গুলো। মিশ্রিত শরত জুড়ে যেমন চলে গেছে ঝকঝকে নীল আকাশের শুভ্র মেঘ গুলো। হেমন্তের অভিমানে চলে গেছে যত হিম কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা প্রকৃতির আবহ। আর চলে গেছে এ বেলার একাল মুহূর্ত ও সাথে অবধিকাল। দুঃখ পেয়োনা, এ জীবন সুখে-দুঃখে গড়া। এমন ভাববার কি প্রয়োজন যে, শেষে কিছুই থাকবে না! অবশ্যই থাকবে, আসবে ঋতুরা আবার, নতুনের সব ডাক আসুক হাওয়াদের সাথে। নবীন রোদ হোক সর্ব সুখের মূল!! যত জয়গান তোমাদের, এ হোক জীবনের স্বার্থকতা।। উল্লাসিত হোক প্রতিটা মনের তৃপ্তি! বিজড়িত মন প্রাণ জাগ্রত হউক আবার নব্যের ডাকে !! সব নতুন আয়োজনে গৃহীত হোক জীবন, নতুন এর সাথে, নতুন এ বর্ষের সাথে জয় হোক তোমাদের !!!! জয় হোক চাওয়া ও পাওয়া গুলো।  --রিজভী নাভিন

শীত ও বিজয়ের মাস (সাহিত্য)

আজ ডিসেম্বর এর ১৬ তারিখ, বিজয়ের মাস পৌষ ২, ১৪২৩. হিমেল ভূর গড়িয়ে বিকেলবেলার উপস্থিতি, মুক্ত মেঘ গুলো ভাসছে অম্লান হয়ে. শীতের বার্তা নিয়ে হাজির হালকা হালকা কুয়াশা ও ঝিরঝির বাতাস। গাছের ডালপালা গুলো প্রফুল্লিত পাখিদের সমারোহে, চুলোর ধোয়াই আবরিত কৃষানির বাড়ির উঠোন, ডুমুরফুলের সাথে টুনটুনির পাখির সন্ধি চিত্র, সাঁরি বাধা নৌকোর সমিক্ষায় ব্যস্ত মাঝি,সরিষা খেতের আঁকা বাঁকা আইল ধরে হেটে যাওয়া কৃষক, চাদরে মোড়ানো মায়ের কোলের শিশুটির চোখে হাজারো অর্থে এ সব চিত্র বর্নিত আমাদের এ বাংলা ঘিরে। কবিতার ভাষায়: "চিএ জরানো বহমান রূপ তার যত, শীতের সাথে অভিযান, মুক্ত মেঘ সঙ্গী হয়ে শত. অসীম তুমি,উদার তুমার বুক, ভালবাসায় সিক্ত বাংলা,অমলিন হোক তোমার মুখ ।" এ সবের মূলে একটাই কারন,ধ্বনি- বিজয় ও বিজয়। সুতরাং বিজয়ের এ দিনে মন, প্রাণ, আকাক্ষা,আশা, ভালবাসায় ভরে যাক আমাদের বাকি জীবনটা ও হাসি থাকুক প্রতিটা মুখে মুখে। সবাইকে বিজয় দিবস এর শুভেচ্ছা। --রিজভী নাভিন

স্থির অরোরা ( অনু-গল্প )

সে ই কবে হারিয়ে যাওয়া একটি ভাবনার কথা বলছি । বলছি তার কথা, যার বিসর্জিত, ত্যাগী, অভিমানী জীবন, আজো আমায় মাঝ রাতে হঠাৎ করেই জাগিয়ে দেয় । তিনজন মানুষকে নিয়ে কিভাবে নৌকোটা চলছে যেন। একজন মাঝি আর তার অপর প্রান্তে বসা আমরা দু জন ! কোন কথা নেই দু জনের, নৌকোটা ধীরে ধীরে স্থির শরতের ডেউকে ভেদ করে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে শাপলার ঝাঁকটার দিকে । কথা ছিল আমি নিজ হাতে শাপলা ফুল তুলে দেবো । বৃদ্ধ মাঝি নির্বাক চোখে এদিক ওদিক তাকিয়ে বৈঠা নাড়াচ্ছে । মনে মনে ভাবি হালকা রোদেলা আকাশ একটু খানি বাতাস নেই,আবার যেন আছেও । শরতের যত অভিমান, থাকতে পাড়ে না আসা ও না বয়ে বেড়ানো হাওয়াদের সাথে । তবে আমরা কেন চুপ? শুধু সামনের দিকে তাকিয়ে বসে আছি কেন ? ক্ষণে ক্ষণে চারপাশে উড়ছে পাতলা গুটি গুটি শিমূল এর তুলো। ঠিক তখনি অদ্রিতার মুখে একটা তুলো এসে লেগে গেলো। দেখলাম তাও সরাচ্ছে না মুখ থেকে। বললাম কি হয়েছে তোমার ? কোন কথা নেই । আবার বললাম, শিউলির মালাটা খুব সুন্দর দেখাচ্ছে খোপাই। হঠাৎ বলা নেই অশ্রুসিক্ত চোখে আমার ডান হাতটা ধরে কান্না । কিছু না বুঝতে পেরে শুধু বললাম আমি কি বুঝিনা তোমাকে? এখানে কান্নার...